ফ্রিল্যান্স সেক্টরে নতুনদের সঠিক গাইডলাইন এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা যোগাতে ডেভসটিম ইনস্টিটিউট সর্বদাই নিবেদিত। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে তরুনরা দেশের অর্থনৈতিক চালিকা শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে বেকারত্ব বিমোচনে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে পারে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে ডেভসটিম পরিবার নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। দীর্ঘ ৩ বছরের যাত্রায় অসংখ্য স্বপ্নবাজ তরুনদের পদচারনায় মুখরিত করে রেখেছে ডেভসটিমের ইনস্টিটিউটের আঙিনা। অনেক তরুন আজ এখান থেকে সঠিক গাইডলাইন পেয়ে হয়েছে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বি। নতুনদের এই সেক্টরে অনুপ্রানিত করতে সেইসব সফল ফ্রিল্যান্সারদের গল্প নিয়ে ডেভসটিম ইনস্টিটিউট উদ্যোগ নিয়েছে কয়েক পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশের। তারই ধারাবাহিকতায় আজকে প্রকাশিত হচ্ছে ডেভসটিম ইনস্টিটিউটের ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভলপমেন্ট প্রশিক্ষনের প্রাক্তন ছাত্র মুজতাহিদুল ইসলাম এর সফলতার গল্প। চলুন জেনে নেওয়া যাক ফ্রিল্যান্স জগতে তার উত্থান এবং সফলতার গল্পঃ
মুজতাহিদুল ইসলাম–
ফ্রিল্যান্সিং ব্যাপারটার সাথে প্রথম পরিচয় আমার গত বছর (২০১৩) মার্চ মাসে। প্রথম দিকে এই ব্যাপারে কিছুই জানতাম না। ভাগ্যক্রমে একদিন ফেসবুকে একটা গ্রুপে যোগ হয়ে যাই। সেখানে অনেক রকম পোস্ট এবং কমেন্ট পড়ি। বলতে গেলে সেখান থেকেই একটু একটু করে জ্ঞান লাভ হয়। তার পর ঐখান থেকে বিপ্লব নামক এক ভাই আমাকে ইমেইল খুলে দেয়ার কাজ দেয়। মূলত ঐ কাজটাই ছিল আমার জীবনের প্রথম ফ্রিল্যান্সিং কাজ। ঐখান থেকে কথা হয় সোহেল নামক আরেক ভাইয়ের সাথে। সে আমাকে কিছু ডাটা এন্ট্রি এবং এসইও কাজ দিতো করার জন্য এবং পাশাপাশি এ ব্যাপারে অনেক পরামর্শ দিতো। আর সেখান থেকেই ওয়ার্ডপ্রেস শিখার প্রতি একটা ঝোক মাথায় আসলো। গুগলে সার্চ করে করে অনেক কিছুই শিখলাম কিন্তু সত্যি বলতে কি অনেক প্রশ্নের উত্তর খুজে পাচ্ছিলাম না। তখন কোন উপায় না পেয়ে একটা ভালো ইনস্টিটিউট খোজা শুরু করলাম।
ভাগ্যক্রমে পেয়ে গেলাম ডেভসটিম কে। অনেকটা কষ্ট করে টাকা যোগাড় করে ভর্তি হলাম ইউনুস ভাইয়ের ক্লাসে। তবে প্রথমে ভয়ে ছিলাম টাকা সব জলে গেলো না তো! কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারলাম এতদিন অযথাই সময় নষ্ট করেছি। অনেক সাবলীল ভাবে প্রথম দিকে চন্দন ভাই এরপর অ্যাডভান্সড লেভেলে ইউনুস ভাই ক্লাস পরিচালনা করেন।
অবশেষে যত কনফিউশন ছিল সব সমাধান হল। তারপর মার্কেট এ কাজ খোজা শুরু করলাম এবং আলহামদুলিল্লাহ পেয়েও গেলাম। প্রথম কাজটা শেষ করে দ্বিতীয় কাজও পেলাম।আমার কাজটা ক্লায়েন্ট এতই পছন্দ করেছিল যে সে আমাকে পরবর্তিতে ফুল টাইম জব অফার করে তাও মার্কেটপ্লেসের বাহিরে। আমার ক্লাইন্টের বিশাল এসইও এবং অ্যাফিলিয়েট বিজনেস। তিনি আমাকে প্রতি মাসে অগ্রিম পে করে তাই পেমেন্ট নিয়ে কোন দুশ্চিন্তা মাথায় আসে না। ক্লাইন্ট তার সব ডেভলপিং এবং অন্যান্য সব কাজ আমাকে দিতে লাগলো। এক পর্যায়ে আমি একটি টিম বানাই এবং এখনও সেই টিমের লিডার হিসেবে আছি। সুসংবাদ হল এখন আমার ক্লাইন্ট আমাকে তার বিজনেসের পার্টনার বানাতে চাচ্ছে।
ভাবতেই ভাল লাগে আমি এই বয়সে নিজে অনলাইনের কাজ করে আয় করছি এবং আর ৪-৫ জনকে টাকা উপার্জনের পথ করে দিয়েছি আল্লাহর রহমতে। এখন এটাই আমার পেশা ও নেশা।
যারা ফ্রিল্যান্স সেক্টরে নতুন অথবা কাজ করতে আগ্রহী তাদের উদ্দেশ্যে আমার কিছু কথা বা উপদেশ-
১। প্রবল ইচ্ছা না থাকলে আপনি এই সেক্টরে বেশীদিন টিকে থাকতে পারবেন না।
২। আপনার ইচ্ছার সাথে ধৈর্য্য অবশ্যই লাগবে।
৩। গুগল কে অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে তবে মার্কেটে ভালো কিছু করতে হলে এক্সপার্টদের শরণাপন্ন অবশ্যই হতে হবে।
৪। ১০০% সৎ থাকতে হবে নয়তো যে কোন সময় আপনার ক্যারিয়ার ধস নেমে যাবে।
৫। মার্কেটপ্লেসে কাজ করতে হলে মোটামুটি টাইপের জ্ঞান এখন আর কাজে লাগে না।
পরিশেষে আমি ডেভসটিমের প্রতি চির কৃতজ্ঞতা জানাই যাদের সঠিক গাইডলাইন আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং নতুনদের জন্য অনেক শুভ কামনা রইল।